Posts

চারদেয়ালের মাঝে পিস লিলি (Spathyphyllum sp.)

Image
বেশ কয়েকবছর আগে অফিসের পক্ষ থেকে একটি সেমিনারে যোগ দিয়েছিলাম। সেমিনারের আয়োজক বিদেশী একটি সংস্থা, আর স্থানটি ছিল ঢাকার একটি পাঁচতারা হোটেল। অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য সাজানো মঞ্চটি দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। রঙ-বেরঙের ফুলের তোড়া দিয়ে মঞ্চের উপরের প্রধান অতিথিদের জন্য নির্ধারিত টেবিলটি সাজানো আর টেবিলের ধার ঘেষে নিচে সারিদিয়ে সাজানো ছিল ফুলসহ বেশ কয়েকটি সতেজ  পিস লিলি   গাছ। আন্তর্জাতিক শান্তি বিষয়ক সেমিনারের ভাবগাম্ভীর্য এনে দিয়েছিল ঐ পিস লিলি গুলি। আমি একেবারে অভিভূত হয়েছিলাম। ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বহুতল ভবনের সামনের ছায়াময় জায়গায় এই গাছ দেখেছি। অপরিচিত অথবা পরিচিত কয়েকজনের অফিসে বা বাসাতেও এই গাছটি দেখেছি। সবখানেই গাছটিকে সম্পূর্ণ মানানসই মনে হয়েছে। গাছটি যেন তার আশেপাশে একটা স্বর্গীয় শান্তির পরিবেশ তৈরী করে রাখে। মনটাই ভাল হয়ে যায়। ঘরের মধ্যে যে কয়েকটি গাছ লালন করা যায়, সেগুলির মধ্যে পিস লিলি অন্যতম জনপ্রিয়। পিস লিলির যত্নের জন্য খুবই কম পরিশ্রম দরকার। পিস লিলি শুধু সৌন্দর্য বর্ধন করে না এটি বায়ুও বিশুদ্ধ করে থাকে। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা   NASA তাদের একটি গবেষণা পত্রে পি

চারদেয়ালের মাঝে বোস্টন ফার্ন (Nephrolepis exaltata)

Image
বোস্টন ফার্ন (Nephrolepis exaltata) ‘চারদেয়ালের মাঝে গাছ’ – এই সিরিজে আজ আর একটি গাছ নিয়ে কথা বলব। ছোট্ট মনোরম ফার্ন (polypodiopsida) শ্রেণীর উদ্ভিদটির নাম বোস্টন ফার্ন যা লালনের জন্য খুবই কম পরিশ্রম ও যত্নের প্রয়োজন হয়। উদ্ভিদপ্রেমীদের কাছে ঘর সাজানোর জন্য এই গাছটি পছন্দের তালিকায় প্রথম। বোস্টন ফার্নের পালনবিধি খুবই সহজ, কিন্তু সামান্য এই নিয়মগুলি খুবই নির্দিষ্টভাবে পালন করতে হয়। এই ফার্নের যত্ন নেয়ার সামান্য কৌশল বা পরামর্শ তুলে দিলাম, যা মেনে চললে আপনার আদরের গাছটি সুস্থ্য, সবল ও ভালো থেকে ঘরের শোভা বৃদ্ধি করবে। কিভাবে পটে বা টবে বোস্টন ফার্ন লাগাবেন : মাটি তৈরি : বোস্টন ফার্ন কিছুটা স্যাতস্যাতে মাটি পছন্দ করে। দো-আঁশ মাটির সাথে প্রচুর পরিমাণ জৈব সার / পাতা পচা সার / কচুরি পানা পঁচা সার মিশিয়ে ফার্নের উপযুক্ত মাটি তৈরি হয়। জৈব সারের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বেশি থাকে। পট বা টব নির্বাচন : পাত্রে জায়গা যত বেশী পাবে এই ফার্ন মাটিতে তত বেশী শিকড় ছড়াবে এবং আকারে তত বড় হবে। সুস্থ সবল একটি ফার্ন ৩ ফুট লম্বা ও ৩ ফুট চওড়া হতে পারে। ঘরের সাথে মান

চারদেয়ালের মাঝে পুদিনা (Mentha sp.)

Image
পুদিনা (Mentha sp.) পুদিনা বহুবর্ষজীবি ছোট গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা সুগন্ধিযুক্ত। পুদিনার আদি বাসস্থান ইউরোপ ও এশিয়ায় (মধ্যপ্রাচ্য, হিমালয় ও চীন ইত্যাদি)। পুদিনার অনেকগুলি প্রজাতি আছে – যারা সকলেই সুগন্ধীযুক্ত। আমাদের দেশে পুদিনা পাতা তরি-তরকারি রান্নার সাথে সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বেশী ব্যবহার করা হয় বড়া, চাটনী তৈরীতে। লেবু বা আমের শরবতে পুদিনা পাতা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বোরহানী, সালাদ এমনকি ফুড ডেকোরেশনের কাজেও ব্যবহৃত হয় এই পাতা। পুদিনার বিশেষ কিছু ঔষধি গুণ আছে। এর পাতা কাণ্ড, মূলসহ সমগ্র গাছই ঔষধীগুণে পূর্ণ। হার্টের সুস্থতা, পেটে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিণ্য, কফ নিরাময়ে এই পাতা কার্যকর। এছাড়া জ্বর, আমাশয়, অজীর্ণ, উচ্চরক্তচাপ নিরাময়ে এই পাতা ব্যবহার হয়। পুদিনা পাতার শরবত ত্বক সতেজ রাখে; পাতার পেষ্ট ব্রণ দূর করে এবং চামড়ার যেকোন সংক্রমণ রোধ করে। দাঁতের মাজন হিসাবও পুদিনা পাতা ব্যবহার হয়। সর্বপরি পুদিনার শেকড়ের রস, চুলের উঁকুন দূর করার এক মোক্ষম ঔষধ। নাগরিক জীবনে পুদিনা পাতার উৎস নিকটস্থ বাজার। তবে বাজারে বর্ষাকালে পুদিনা বেশী পাওয়া গেলেও সারা বছর সমভাবে পাওয়া য

চারদেয়ালের মাঝে সুদর্শনা (Anthurium andraeanum)

Image
অফিসে বা বাড়ীর ড্রইং রূমে একটু জীবন্ত সবুজের ছোঁয়া আমার খুবই পছন্দ। কিন্তু গাছ রোদ ছাড়া বাঁচে না। তাহলে আমার ফ্ল্যাট বাসা য় বা অফিস রূমে গাছ রাখব কিভাবে? উপায় আছে ...। বেশ কয়েকটি দৃষ্টি নন্দন লতা ও গুল্ম জাতীয় গাছ আছে যা ঘরের সরাসরি সূর্যের আলো ছাড়া পরিবেশে রেখে বড় করা যায় । Anthurium এমনই এক ঝোপ জাতীয় উদ্ভিদ যার বেড়ে ওঠার জন্য সরাসরি সূর্যের আলো দরকার হয় না, দরকার নেই অতিরিক্ত পানি, অতিরিক্ত সার, কিংবা পরিচর্যা। আলোকিত ঘর আর সামান্য যত্নের বিনিময়ে Anthurium দেয় চকচকে সবুজ পাতার চমক আর আকর্ষণীয় রঙিন ফুল। পরিচিতি – একবীজপত্রী (Monocots) উদ্ভিদ শ্রেণীভূক্ত Anthurium গণভূক্ত প্রায় ১০০০-এর কাছাকাছি প্রজাতি সণাক্ত করা গেছে। Anthurium এর আদি বাস মেক্সিকো থেকে আর্জেন্টিনা এবং উরুগুয়ে পর্যন্ত। অনেকে Anthurium–কে Flamingo flower (Flemingo Lily), Hawaiian love plant, Painter’s palette বা Tail Flower নামেও চেনেন, বাংলায় এটি সুদর্শনা নামে পরিচিত। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৫০টি প্রজাতির চাষ হয়। গাছটি গড়ে দেড় ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে পট / টব পরিবর্তন করে কিংবা শিকড় ছাঁটাই করে প্রায় ১ ফুট আক